সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কপিরাইট এবং পাইরেসি সম্পর্কে সকল কিছু

  আসসালমুআলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছো। আজকে আমরা আমাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ন টপিক, পাইরেসি এবং কপিরাইট, সম্পর্কে জানবো। এই পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে মূলত মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের টার্গেট করে। যেন তোমরা পরীক্ষায় এ সম্পর্কে খুব সুন্দর এবং তথ্যপূর্ণ উত্তর লিখতে পারো। শুধু শিক্ষার্থিদের জন্যই নয়, এই বিষয় দুটি সম্পর্কে আমাদের সকলেরই সমান ভাবে জানা উচিত যারা আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি।

পাইরেসি এবং কপিরাইট সম্পর্কে জানা প্রত্যেকের জন্যই প্রয়োজনীয় কেননা এটি সম্পর্কে পরিষ্কার জ্ঞান একজন ব্যক্তিকে আরো বেশি সৃজনশীল করে তুলতে পারে। তো কথা না বাড়িয়ে চলো জেনে নেওয়া যাক 'পাইরেসি বলতে কি বোঝায়' এবং 'কপিরাইট শব্দটির অর্থই - বা কি' এবং এদের ব্যবহারই বা কোথায়?

কপিরাইট কি?

যেকোনো মানুষের তার নিজস্ব কিছু না কিছু সৃজনশীল প্রতিভা রয়েছে। আর মানুষ তার এইসকল সৃজনশীল প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করে নানা রকমের ইউনিক এবং নতুন নতুন শিল্প। এসব শিল্পের অধিকারী যে শুধু তিনিই, যিনি জিনিসটিকে তৈরি করেছেন – এই কথাটিকে বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে কপিরাইট।
সোজা কথায়, জিনিস যার ভোগ করার অধিকারও তার - এই কথাটির প্রয়োগই কপিরাইট। কপিরাইট বলতে একজনের সৃষ্ট কর্ম আরেকজন কিভাবে ব্যাবহার করবে সে বিষয়টিই মূলত বোঝানো হয়।
কপিরাইট কে সৃজনশীল শিল্প নির্মাতারা আশীর্বাদ স্বরূপ মনে করেন। কারণ এর মাধ্যমেই আমরা মূলত কোনো সৃষ্ট কর্মের আসল নির্মাতাকে চিনতে পারি। সরকার কর্তৃক ঘোষিত সকল তথ্য অধিকারের মধ্যে কপিরাইট অন্যতম।

What is copyright and piracy

কপিরাইট আইন কি:

সৃজনশীল কর্মীদের তাদের নিজস্ব অধিকার রক্ষার্থে রয়েছে কপিরাইট আইন। কবি, সাহিত্যিক, ওয়েব ডিজইনার বা যেই হোক না কেনো, যদি নিজের মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে নতুন কোনো একটি জিনিস তৈরি করে তাহলে সেই জিনিসটি যে তিনিই তৈরি করেছেন তার প্রমাণ রাখাই কপিরাইট আইনের প্রধান লক্ষ্য। একজন ডেভেলপার অনেক ধৈর্য, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে কোনো কিছু তৈরি করার পর নিশ্চই চাইবেন না অন্যরা তার সৃষ্ট কর্ম যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যাবহার করুক। তিনি অবশ্যই চান তার তৈরি করা জিনিসগুলো যেনো অন্যরা তার নিজস্ব গণ্ডি পর্যন্ত ওই ডেভেলপারের মতামত অনুযায়ী ব্যাবহার করতে পারে। আর এই কাজটি সম্পন্ন করতে কপিরাইট আইন ব্যাবহার করে থাকে কর্মীরা।

কপিরাইট আইনের প্রয়োজনীয়তা:

কপিরাইট আইনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু তা একজন শিল্পী খুব ভালো করেই বোঝেন। সৃজনশীল কর্মী তার কাজের জন্য সত্ত্বাধিকার রক্ষা করেন। সৃষ্ট কর্মের সকল উপকার স্রষ্টাই যেনো ভোগ করতে পারেন সেজন্য কপিরাইট আইনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। অর্থের প্রয়োজন সবার জীবনেই আছে। এক্ষেত্রে কবি, সাহিত্যিক, নির্মাতা, ডিজাইনকারি সবাই চায় নতুন কিছু তৈরি করে সেখান থেকে টাকা উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতে। কিন্তু কপিরাইট আইন যদি না থাকতো তাহলে নির্মাতার কাজটি তার আগেই অন্য কেউ বিক্রি করা শুরু করতো এবং ওই ব্যাক্তিই উপকৃত হতো। ফলে নির্মাতার আর কোনো লাভ হতো না বা তার নামটি পর্যন্ত থাকতো না। আর এত পরিশ্রমের পর যদি তার কর্ম দিয়ে অন্য কেউ ব্যাবসা করে তাহলে নির্মাতাও উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। ফলে তিনি তারপর থেকে স্বাভাবিকভাবেই নতুন কিছু তৈরি করতে চান না। যেটি দেশ ও জাতির জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়াত।
এজন্য কপিরাইট আইনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক।

 আরো পড়ুনঃ

ই বুক কি এর কাজ এর ফাইল ফরম্যাট? সকল কিছু।- গুরত্বপূর্ন

পাইরেসি কি?

আমরা এতক্ষণ কপিরাইট নিয়ে আলোচনা করলাম। কপিরাইট আর পাইরেসি টপিক দুটো একে অপরের সাথে জড়িত। সাধারণ ভাবে বলা যায়, কপিরাইট আইন ভঙ্গ করাকে পাইরেসি বলে।
অর্থাৎ কেউ যদি সৃজনশীল কর্মী কর্তৃক নির্মিত জিনিস তার অনুমতি ব্যাতিত ব্যাবহার করে তাহলেই সেটিকে পাইরেসি ধরা হয়। আগে যখন তথ্য প্রযুক্তির তেমন ব্যাবহার ছিল না তখন পাইরেসি হতোই না বললেই চলে। কেননা তখন মুদ্রণ করা বই কপি করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। কিন্তু এখন তথ্য প্রযুক্তির দিনে পাইরেসি বেড়ে গেছে। কারণ এখন কোনো সৃষ্ট কর্ম পুনর্মুদ্রণ একেবারেই সহজ। এরকম পনুর্মুদ্রণ করা হলে সেখানেই পাইরেসি হয় অর্থাৎ বলা যায় কপিরাইট আইন ভঙ্গ হয়।

তবে পাইরেসি রোধে বিজনেস সফটওয়্যার এলায়ান্স (BSA) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি সৃষ্টিশীল মানুষের জন্য পাইরেসি রোধে কাজ করে। যদিও বর্তমানে এই বিষয়ের উপর নজরদারি করা অনেক কঠিন।
তবে এখন পর্যন্ত পাইরেসির হার অনেকটাই বেশি। যেমন: উক্ত সংস্থার ২০১১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহারকরীদের ৩০ শতাংশ পাইরেসির সাথে যুক্ত। বাংলাদেশের তথ্য অধিকার ও নিরাপত্তা আইনেও পাইরেসিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

Copyright law in bangladesh

তাই আমরা চেষ্টা করবো যেন আমরা পাইরেসি মুক্ত তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করতে পারি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে সকল কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন
 

আজ এই পর্যন্তই। আশা করি তোমাদের আর্টিকেলটিতে তোমাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়েছ। এছাড়াও আর যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারো। ভালো লাগল বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করো অবশ্যই। আসসালমুআলাইকুম।

মন্তব্যসমূহ

Most Popular

ক্ষমতা কি, ক্ষমতার একক, মাত্রা, উদাহরণ এবং সূত্র

 ক্ষমতা কি? দৈনন্দিন জীবনে ক্ষমতা শব্দটির নানাবিধ অর্থ থাকতে পারে। কিন্তু এখানে ক্ষমতার ব্যাখ্যা শুধুমাত্র পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেওয়া হয়েছে। তাই এই পথে তোমরা পদার্থবিজ্ঞানে ক্ষমতার যে সুনির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে তা জানতে পারবে। ক্ষমতার সঙ্গা: কোনো একটি বস্তু একক সময়ে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে তাকে ক্ষমতা বলে। (এখানে বস্তুটি কোনো ব্যক্তি বা যন্ত্রও হতে পারে।) অর্থাৎ ক্ষমতা হলো কাজ করার হার। আরো সহজ করে বলা যায়, একক সময়ে কৃৎকাজই ক্ষমতা। বল কি এবং কত প্রকার সহজ ব্যাখ্যা ও উদাহরণসহ এক্সক্লুসিভ কাজ কি সে সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করতে পারো। ক্ষমতা নির্ণয়ের সূত্র: আমরা জানি শক্তির কোনো ধ্বংস নেই। শক্তি কেবলমাত্র কাজের দ্বারা এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়। যেহেতু এই কাজ করার হার-ই ক্ষমতা। কাজেই আমরা ক্ষমতা বলতে কাজ করার হার এর বদলে শক্তির রূপান্তরের হার বলতে পারি। অর্থাৎ, যদি t সময়ে W কাজ সম্পন্ন হয় তাহলে ক্ষমতা, P = W/t অতএব, যদি 5 সেকেন্ডে 10j কাজ সম্পন্ন হয় তাহলে ক্ষমতা, P = 10/5 =2W ক্ষমতা সম্পর্কিত গাণিতিক সমস্যা সমাধান: একটি উদাহরণের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতা ...

সংকেত কাকে বলে, সংকেত লেখার নিয়ম এবং উদাহরণ

সংকেত কাকে বলে? সংকেত শব্দটি রসায়নে একটি সুনির্দিষ্ট অর্থ বহন করে। বাস্তব জীবনে সংকেত শব্দটি আমরা বিভিন্ন ভাবে ব্যাবহার করলেও এখানে 'সংকেত' শব্দটি রসায়নের আলোকে বর্ণনা করা হয়েছে। সংকেতের সঙ্গা: কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের অনুর সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় সংকেত। আমরা জানি, প্রতিটি পদার্থ অজস্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরমাণুর দ্বারা গঠিত। আর দুই বা দুইয়ের অধিক পরমাণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে গঠন করে অনু। এই অনুই হচ্ছে পদার্থের নির্দিষ্ট ধর্মের একক রূপ। রসায়ন চর্চার সময় আমরা পদার্থের ধর্মের একক রূপকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করি। যা সংকেত নামে পরিচিত। সংকেতের উদাহরণ: আমরা যদি হাইড্রোজেন গ্যাসকে রাসায়নিকভাবে প্রকাশ করতে চাই তবে হাইড্রোজেন অনুর দ্বারা প্রকাশ করতে হবে। দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু মিলে একটি হাইড্রোজেন অনু গঠিত হয়। অর্থাৎ এখন হাইড্রোজেনের অনুকে আমরা এভাবে লিখতে পারি : H 2 । আর এটি যেহেতু হাইড্রোজেন অনুকে সংক্ষিপ্ত রূপে প্রকাশ করে তাই H 2 -ই হলো হাইড্রোজেনের সংকেত। এরকম আরো কয়েকটি মৌল বা যৌগের সংকেত নিচে দেওয়া হলো: সালফিউরিক এসিডের সংকেত — H 2 SO 4 অক্সিজেন গ্যাসের সংকেত — O ...

কাজ কি? কাজের একক, মাত্রা, প্রকারভেদ এবং সূত্র

 কাজ কি? এই প্রশ্নটি নির্বাচন করা হয়েছে এসএসসি পদার্থ বিজ্ঞান বই থেকে। তাই কাজ কি এই টপিকটি সম্পর্কে এখানে আমরা যা তুলে ধরেছি তার সবই পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে। কাজের সংজ্ঞা: কোন বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে বস্তুর সরণ ঘটানোকেই কাজ বলে। অর্থাৎ প্রথমত বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করতে হবে এবং এরপর যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর সরণ হয় তবে সেখানে কাজ সম্পন্ন হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তুমি যদি একটা ফুটবলকে লাথি দাও এবং এরপর যদি ফুটবলটা তোমার লাথির কারণে কিছুটা অগ্রসর হয় তবে তুমি কাজ করেছ। কারণ প্রথমত তুমি লাথির মাধ্যমে ফুটবলটার ওপর বল প্রয়োগ করলে এবং সেই বলের কারণে ফুটবলটা তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। অর্থাৎ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আবার এই একই লাথি যদি তুমি কোন দেয়ালে গিয়ে মারো এবং দেওয়ালের যদি অবস্থানের পরিবর্তন না হয় তবে সেখানে কিন্তু কোন কাজ সম্পন্ন হয়নি। অর্থাৎ মূল কথা হচ্ছে কাজ সম্পন্ন করতে হলে অবশ্যই বল প্রয়োগ করতে হবে এবং সরণ ঘটতে হবে। এ দুটির কোনটির একটি অনুপস্থিত থাকলে কাজ সম্পন্ন হয় না। যদিও এসব শর্ত দৈনন্দিন জীবনে কাউকে দিলে সে তা মানবে না। আরো পড়োঃ ক্ষমতা কি, ক্ষমতার এক...