সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ক্ষমতা কি, ক্ষমতার একক, মাত্রা, উদাহরণ এবং সূত্র

 ক্ষমতা কি?

দৈনন্দিন জীবনে ক্ষমতা শব্দটির নানাবিধ অর্থ থাকতে পারে। কিন্তু এখানে ক্ষমতার ব্যাখ্যা শুধুমাত্র পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেওয়া হয়েছে। তাই এই পথে তোমরা পদার্থবিজ্ঞানে ক্ষমতার যে সুনির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে তা জানতে পারবে।

ক্ষমতা কি


ক্ষমতার সঙ্গা:

কোনো একটি বস্তু একক সময়ে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে তাকে ক্ষমতা বলে। (এখানে বস্তুটি কোনো ব্যক্তি বা যন্ত্রও হতে পারে।) অর্থাৎ ক্ষমতা হলো কাজ করার হার। আরো সহজ করে বলা যায়, একক সময়ে কৃৎকাজই ক্ষমতা।

বল কি এবং কত প্রকার সহজ ব্যাখ্যা ও উদাহরণসহ এক্সক্লুসিভ

কাজ কি সে সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করতে পারো।

ক্ষমতা নির্ণয়ের সূত্র:

আমরা জানি শক্তির কোনো ধ্বংস নেই। শক্তি কেবলমাত্র কাজের দ্বারা এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়। যেহেতু এই কাজ করার হার-ই ক্ষমতা। কাজেই আমরা ক্ষমতা বলতে কাজ করার হার এর বদলে শক্তির রূপান্তরের হার বলতে পারি।

অর্থাৎ, যদি t সময়ে W কাজ সম্পন্ন হয় তাহলে ক্ষমতা, P = W/t

অতএব, যদি 5 সেকেন্ডে 10j কাজ সম্পন্ন হয় তাহলে ক্ষমতা, P = 10/5 =2W

ক্ষমতা সম্পর্কিত গাণিতিক সমস্যা সমাধান:

একটি উদাহরণের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতা সম্পর্কে গাণিতিক ও বাস্তব ধারণা লাভ করতে পারি।

প্রশ্ন: রিফাতের ভর 60 kg । সে একটি দালানের সিঁড়ি বেয়ে 30 সেকেন্ডে 20 m উচ্চতায় উঠতে পারে। তার ক্ষমতা কত?

উত্তর:

আমরা জানি,

ক্ষমতা P = W/t

অতএব, ক্ষমতা বের করার জন্য প্রথমে কাজ(W) বের করে নিতে হবে।

দেওয়া আছে,

ভর m = 60 kg

উচ্চতা h = 20 m

কাজ W = ?

আমরা জানি,

W = mgh

=60×9.8×20

=11760 j

ক্ষমতা P = W/t

=11760/30

=392 W(ওয়াট)

অতএব রিফাতের ক্ষমতা 392 ওয়াট(W).

ক্ষমতার একক:

ক্ষমতার সূত্র থেকে আমরা ক্ষমতার একক বের করতে পারি,

ক্ষমতা = কাজ/সময়

=j/s

=js-1 / W(ওয়াট)

অতএব, ক্ষমতার একক js-1 বা ওয়াট

ক্ষমতা একটি স্কেলার রাশি। কেননা ক্ষমতার শুধু মান আছে কোনো নির্দিষ্ট দিক নেই

ক্ষমতার মাত্রা:

ক্ষমতা নির্ণয়ের সূত্র থেকে পাই,

ক্ষমতা = কাজ/সময়

=ভর×ত্বরণ×সরণ/সময়

=M×LT-2×L/T

=MLT-3

ক্ষমতার মাত্রা [P] = [ML2T-3]

বাস্তব জীবনে ক্ষমতার উদাহরণ:

আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি যে, 1 সেকেন্ড সময়ে যদি 1 জুল কাজ করা হয় তাহলে কাজটির ক্ষমতা 1W(ওয়াট)। এবং এটি যেহেতু শক্তি রূপান্তরের সাথে সম্পর্কিত, তাহলে বলা যায় 1 ওয়াট শক্তির রূপান্তর হয়েছে বা 1 ওয়াট শক্তি ব্যয় হয়েছে। 

একইভাবে, আমরা বাসা বাড়িতে যেসব বাতি জ্বালাই তা যদি 40 watt এর একটি বাতি হয়, তাহলে বোঝা যাবে সেখানে প্রতি সেকেন্ডে 40 watt শক্তি ব্যয় হচ্ছে। এবং এই মন থেকে পরবর্তীতে আরো অনেক কিছু বের করা সম্ভব।

এছাড়াও যদি বলা হয়, একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষমতা 3000 W তাহলে বুঝতে হবে বিদ্যুৎ কেন্ত্রটি থেকে প্রতি সেকেন্ডে 3000 W শক্তি উৎপন্ন হয়।

আশা করি এই আর্টিকেলটা তোমার উপকারে এসেছে। এখান থেকে তোমার বন্ধুও যেন কিছু জানতে পারে তার জন্য পোস্টটা শেয়ার করতে পারো। এরকম আরো তথ্যবহুল পোস্ট পেতে ঘুরে দেখতে পারো এই সাইটটি।

এছাড়া এই ক্ষমতা সম্পর্কিত তোমার আর যেকোনো সমস্যা থাকলে কমেন্টে জানাতে পারো।

মন্তব্যসমূহ

Most Popular

সংকেত কাকে বলে, সংকেত লেখার নিয়ম এবং উদাহরণ

সংকেত কাকে বলে? সংকেত শব্দটি রসায়নে একটি সুনির্দিষ্ট অর্থ বহন করে। বাস্তব জীবনে সংকেত শব্দটি আমরা বিভিন্ন ভাবে ব্যাবহার করলেও এখানে 'সংকেত' শব্দটি রসায়নের আলোকে বর্ণনা করা হয়েছে। সংকেতের সঙ্গা: কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের অনুর সংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় সংকেত। আমরা জানি, প্রতিটি পদার্থ অজস্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরমাণুর দ্বারা গঠিত। আর দুই বা দুইয়ের অধিক পরমাণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে গঠন করে অনু। এই অনুই হচ্ছে পদার্থের নির্দিষ্ট ধর্মের একক রূপ। রসায়ন চর্চার সময় আমরা পদার্থের ধর্মের একক রূপকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করি। যা সংকেত নামে পরিচিত। সংকেতের উদাহরণ: আমরা যদি হাইড্রোজেন গ্যাসকে রাসায়নিকভাবে প্রকাশ করতে চাই তবে হাইড্রোজেন অনুর দ্বারা প্রকাশ করতে হবে। দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু মিলে একটি হাইড্রোজেন অনু গঠিত হয়। অর্থাৎ এখন হাইড্রোজেনের অনুকে আমরা এভাবে লিখতে পারি : H 2 । আর এটি যেহেতু হাইড্রোজেন অনুকে সংক্ষিপ্ত রূপে প্রকাশ করে তাই H 2 -ই হলো হাইড্রোজেনের সংকেত। এরকম আরো কয়েকটি মৌল বা যৌগের সংকেত নিচে দেওয়া হলো: সালফিউরিক এসিডের সংকেত — H 2 SO 4 অক্সিজেন গ্যাসের সংকেত — O ...

কাজ কি? কাজের একক, মাত্রা, প্রকারভেদ এবং সূত্র

 কাজ কি? এই প্রশ্নটি নির্বাচন করা হয়েছে এসএসসি পদার্থ বিজ্ঞান বই থেকে। তাই কাজ কি এই টপিকটি সম্পর্কে এখানে আমরা যা তুলে ধরেছি তার সবই পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে। কাজের সংজ্ঞা: কোন বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে বস্তুর সরণ ঘটানোকেই কাজ বলে। অর্থাৎ প্রথমত বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করতে হবে এবং এরপর যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর সরণ হয় তবে সেখানে কাজ সম্পন্ন হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তুমি যদি একটা ফুটবলকে লাথি দাও এবং এরপর যদি ফুটবলটা তোমার লাথির কারণে কিছুটা অগ্রসর হয় তবে তুমি কাজ করেছ। কারণ প্রথমত তুমি লাথির মাধ্যমে ফুটবলটার ওপর বল প্রয়োগ করলে এবং সেই বলের কারণে ফুটবলটা তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। অর্থাৎ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আবার এই একই লাথি যদি তুমি কোন দেয়ালে গিয়ে মারো এবং দেওয়ালের যদি অবস্থানের পরিবর্তন না হয় তবে সেখানে কিন্তু কোন কাজ সম্পন্ন হয়নি। অর্থাৎ মূল কথা হচ্ছে কাজ সম্পন্ন করতে হলে অবশ্যই বল প্রয়োগ করতে হবে এবং সরণ ঘটতে হবে। এ দুটির কোনটির একটি অনুপস্থিত থাকলে কাজ সম্পন্ন হয় না। যদিও এসব শর্ত দৈনন্দিন জীবনে কাউকে দিলে সে তা মানবে না। আরো পড়োঃ ক্ষমতা কি, ক্ষমতার এক...